বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে বিদেশিদের জন্য থাকছে বিশেষ পর্যটন জোন

ভ্রমণ ডেস্ক : সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের ভেতরে ১০০ একর জায়গায় বিদেশিদের জন্য একটি ‘এক্সক্লুসিভ জোন’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চফল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বিদেশি পাসপোর্ট দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে এ জোনে।

এ বিষয় বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টার-এশিয়া লিমিটেড সহোযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখন নীতিগত অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, “মোট ৯৪০ একর জায়গার মধ্যে ১০০ একর জায়গায় হবে বাংলাদেশের প্রথম এক্সক্লুসিভ জোন। সেখানে শুধু ফরেন (বিদেশি) পাসপোর্ট যাদের আছে, তারাই যেতে পারবেন।”

সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে টেকনাফ উপজেলার সাগর তীরে অবস্থিত। বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ও অন্যান্য পর্যটন স্পটসমূহের জন্য কক্সবাজার দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চিত্ত বিনোদন ও নৈসর্গিক প্রাকৃতিক শোভা দেখার জন্য অন্যতম গন্তব্যস্থল।

অমিত সম্ভাবনাময় এ জায়গাগুলোকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক এবং টেকনাফ উপজেলার জালিয়ার দ্বীপে নাফ ট্যুরিজম পার্ক ও সাবরাং ইউনিয়নে সাবরং ট্যুরিজম পার্ক স্থাপন করছে বেজা।

বেজা বলছে, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক হবে বাংলাদেশের ট্যুরিজমের অন্যতম আকর্ষণীয় ও বিনোদনের কাঙ্ক্ষিত স্থান। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ট্যুরিজম খাতে এক নতুন দিগন্ত উম্মোচন হবে। বিদেশি পর্যটকরা আকৃষ্ট হবেন। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে প্রায় ১৫,০০০ লোকের।

বেজা সূত্রে জানা গেছে, সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ইতোমধ্যে ২৭ জন বিনিয়োগকারীর অনুকূলে ১১২.২৯ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে, যাদের প্রস্তাবিত বিনিয়োগ ৪১৩ মিলিয়ন ডলার। এদের মধ্যে নেদারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে সীমানা প্রাচীর ও অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান আছে। এখানে থাকবে ৫ তারকা হোটেল, ইকো- ট্যুরিজম, মেরিন একুয়ারিয়াম, সি-ক্রুজ, বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিশেষ সংরক্ষিত এলাকা। সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের বিশেষ ব্যবস্থা, ভাসমান জেটি, শিশু পার্ক, ইকো-কটেজ, ওসানেরিয়াম, আন্ডার ওয়াটার রেস্টুরেন্ট, ভাসমান রেস্টুরেন্টসহ নানাবিধ বিনোদনের সুবিধা।

শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, “সাবরং ট্যুরিজম পার্কে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন লে আউট তৈরি করবো। ইউটিলিটি সাপোর্ট, লেক তৈরি করা , গলফ কোর্ট করাসহ এরজন্য এটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণলয়ে যাওয়ার অপেক্ষা আছে।”

তিনি বলেন, যে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এখানে জমি বরাদ্দ নিয়েছে, তারা চাইলে লে আউট নিয়ে তাদের নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবে।

সাবরাংয়ে যুক্ত হবে ক্যাবল কার

বেজা সূত্রে জানা গেছে, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ থেকে নেটং হিল হয়ে নাফ ট্যুরিজম পার্ক পর্যন্ত প্রায় ৮.৫০ কিলোমিটার ক্যাবল কার স্থাপনের জন্য একটি সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদন করা হচ্ছে এবং সমীক্ষাটি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

ইউসুফ হারুন বলেন, “নাফ টুরিজম পার্ক থেকে ক্যাবল কার দিয়ে সাবরাংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই। যেটির ডিজাইন তৈরি করেছি। আমরা এখন আন্তর্জাতিক টেন্ডারে যাবো। এটি তৈরি হলে আমরা মালেয়শিয়া বা অন্যান্য জায়গায় যেভাবে ক্যাবল কার সম্পৃক্ত করে একটি দ্বীপকে ট্যুরিজম ফ্যাসিলিটি করেছে, আমরাও সেটি করতে পারবো।

সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে হোটেল করার জন্য জায়গা নিয়েছে ইফাদ মোটরস। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ বলেন, “আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। প্রতি বছর বিশাল জনগোষ্ঠী আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ— ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মালেয়শিয়া ঘুরতে যায়। আমাদের গর্বের জায়গা আমাদের সমুদ্র সৈকত। এখানে বিশ্বমানের সুবিধা দেওয়া হলে বাংলাদেশেই ঘুরতে পারবে তারা।”

“কক্সবাজার শহর থেকে এক্সেপ্রেসওয়ে হচ্ছে সাবরাং পার্ক পর্যন্ত। নতুন এয়ারপোর্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা থাকায় আমরা বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে পারবো,” বলেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সন্তোষ কুমার দেব বলেন, কক্সবাজারের পর্যটনকে ঘিরে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কসহ অনেক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। তবে এগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। তারপর পর্যটন পণ্যগুলোকে ব্রান্ডিং করতে হবে।

তিনি বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতিতে পর্যটন শিল্পের জিডিপিতে আবদান ১০.৩ শতাংশ; কিন্তু বাংলাদেশে ভ্রমণের সব উপাদন থাকার পরেও ডিজিপিতে পর্যটনের অবদান মাত্র ৩ শতাংশ। তাই বাংলাদেশে নিরাপদ পর্যটন গন্তব্যের বিষয়ে সরকারকে ব্রান্ডিংয়ের দিকে নজর দিতে হবে।”

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, “প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ৩০ লাখ পর্যটক বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছে, এতে অনেক ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে। এ ট্যুরিজম পার্কগুলো হলে দেশের মধ্যেই এই পর্যটকরা ঘুরবেন। সেইসঙ্গে বিদেশি পর্যটকও বেশি বেশি আসবেন বাংলাদেশে।”

তিনি বলেন, “প্রতিযোগী দেশগুলো দ্রুত তাদের পর্যটন স্পটে সুবিধা বাড়াচ্ছে। তাই বাংলাদেশ যদি দ্রুত এ ট্যুরিজম পার্কগুলো স্থাপন না করে, তাহলে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে আমরা পিছিয়ে পড়বো ।”

  • দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর প্রতিবেদন
নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888