সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ সৈকতে গোসলে নেমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২ বুদ্ধাঙ্ক (IQ) এর পরিমাপ অনুযায়ী প্রতিভাবান শিশুদের বুদ্ধাঙ্ক মাত্রা চকরিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ জীবন সংগ্রামি লাইলার কম মূল্যের সবজির দোকান শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

মামলা দিল র‌্যাব; আসামি বাদ দিল পুলিশ

বিশেষ প্রতিবেদক : টেকনাফে র‌্যাব পরিচালিত এক অভিযানে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা উদ্ধারের মামলা থেকে এক আসামীকে অব্যাহতি প্রদান করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে টেকনাফ থানা পুলিশ।

এ সংক্রান্ত মামলাটি নথিপত্র প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। গত ২১ জুন টেকনাফের হোয়াইক্যং র‌্যাব ক্যাম্পের সদস্য নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। যে মামলাটির তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদ ফয়সালকে। তিনি গত ১ অক্টোবর এই মামলাটির অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেন। যেখানে মামলার দুই নম্বর আসামী টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরার মুনাফের পুত্র ওসমান গণিকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। যেখানে অভিযুক্ত করা হয় একই ইউনিয়নের নাইক্ষ্যংখালী এলাকার মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ ফারুককে।

র‌্যাবের দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০ জুন সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে হ্নীলার নাইক্ষ্যংখালীর মোহাম্মদ ফারুকের বসতবাড়িতে র‌্যাব এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে একজন ব্যক্তি পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় মোহাম্মদ ফারুককে। গ্রেফতার ফারুক এবং অভিযানের সময় উপস্থিত এলাকার লোকজন পালিয়ে যাওয়া যুবক ওসমান গণি বলে নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেন। র‌্যাব পরের দিন মোহাম্মদ ফারুককে প্রধান আসামি এবং ওসমান গণিকে পলাতক আসামী উল্লেখ করে টেকনাফ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ৩ মাসের মাথায় আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্রটি (চার্জশিট) দাখিল করেন। যেটি গত ১ অক্টোবর অগ্রগতির সুপারিশ করেন টেকনাফ থানার ওই সময়ের ওসি মো. জোবায়ের সৈয়দ। ইতিমধ্যে টেকনাফ থানা থেকে ওসি মো. জোবায়ের সৈয়দ বদলি হয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিয়ে ওসি মো. জোয়াবের সৈয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি এখন টেকনাফ থানায় নেই। বিষয়টি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তাই ভাল জানবেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্তকারি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করার পরামর্শ দেন।

র‌্যাবের দায়ের করা এজাহারে বলা হয়েছে, সকাল ১০টার পরে এই অভিযান। দিনের আলোয় পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সহজ। গ্রেফতার মোহাম্মদ ফারুক ও এলাকার লোকজন এবং মামলার স্বাক্ষীরা ওসমান গণিকে শনাক্ত করায় মামলার আসামী পলাতক আসামী করা হয়েছিল। কিন্তু ৩ মাস পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এ আসামীকে কিসের ভিত্তিতে অব্যাহতি প্রদান করেছেন তা তদন্তকারি কর্মকর্তাই জানবেন বলে মন্তব্য করেছে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদ ফয়সাল জানান, মামলার তদন্তকালে আসামী মোহাম্মদ ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদে ওসমান গণি নামে কাউকে চিনেন না বলে তাকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলার স্বাক্ষীদের কেউ ওসমান গণি নামে অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে থাকা বা পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তিগত সহায়তায় ওসমান গণির অবস্থান অভিযানস্থলে না হওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্র (চার্জশিট) নিয়ে আদালত পরবর্তি সিদ্ধান্ত জানাবেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারি কর্মকর্তার স্বাধীন ভূমিকা রয়েছে। তিনি ঘটনার সার্বিক দিক ও বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে থাকেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার তৈরী প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও অফিসার্স ইনচার্জ যাচাই করে সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি পুলিশ সুপার পর্যালোচনা করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। এরপরই তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেদনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরাই ভাল করে বলতে পারবেন।

এ নিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, জেলায় প্রতিমাসেই অন্তত চার শতাধিকের বেশী মামলা দায়ের হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তো নথিপত্র না দেখে সকল মামলার ব্যাপারে সঠিকভাবে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

তারপরও বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে বলে জানান মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল সম্প্রতি মামলার অভিযোগপত্র সংক্রান্ত কয়েকটি মামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, র‌্যাব মামলা দিল, ইয়াবা বিশাল চালান। পলাতক আসামিকে পুলিশ বাদ দিয়ে দিল। এর আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা অপর একটি মামলার অভিযোগপত্র থেকে প্রধান ২ জনকে বাদ দিয়েছে খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তদন্তকারি কর্মকর্তা। এতে মাদক ব্যবসায়ি বা সিন্ডিকেট বার বার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আরও সজাগ থাকার অনুরোধ জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888