শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪

পিতৃ পরিচয় আদায়ের আন্দোলনে আবারও হেরেছেন ইসহাক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার ২৭ বছর বয়সী যুবক মোহাম্মদ ইসহাক, যিনি গত ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে নিজের বাবা দাবি করে সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। গত ২ বছর ধরে আদালতে দায়ের করা মামলাটি বিচারধিন রয়েছে। মামলার বিবাদি সর্ব পরিচিত আবদুর রহমান বদি হলেও আদালতের পাঠানো নোটিশ পৌঁছানো যাচ্ছে না তাঁর কাছে। ফলে মামলার দীর্ঘসূত্রিতার ন্যায় বিচার পেতে সচেতন ও জনমত তৈরির আন্দোলনের অংশ হিসেবে কক্সবাজার ৪ আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন মোহাম্মদ ইসহাক।

সোমবার মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাইকালে ইসহাকের মনোনয়ন পত্রটি বাতিল করা হয়েছে। জেলা রিটানিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোট ভোটারের এক শতাংশ যে স্বাক্ষর জমা দেয়া হয়েছে তা সঠিক না হওয়ায় ইসহাকের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে।

কিন্তু মোহাম্মদ ইসহাক জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেছেন, ‘আমার পিতা আবদুর রহমান বদি সাবেক সংসদ সদস্য। ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আমার ছোট মা শাহীন আক্তার আবারও আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করছেন। গত ২ বছর আগে দায়ের যে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বাবা একজন সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। ছোট মা শাহীন আক্তার বর্তমান সংসদ সদস্য। তারা উভয়ে প্রভাব খাটানোর কারণে আদালতে মামলাটির দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে। ফলে আমি ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। তাই একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন ও জনমত তৈরি করতে চেয়েছিলান। কিন্তু তাতেও হেরে গেলাম।

ইসহাক বলেন, আমি যে ভোটারদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি তা ঘরে ঘরে গিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছি। যা আমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও আকারে শেয়ার করেছি। মুলত আমার পিতা অত্যন্ত শক্তিশালী প্রভাবশালী ব্যক্তি। যারা আমার পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন তাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে হুমকি প্রদান করেছেন। ফলে যারা স্বাক্ষর দিয়েছেন তারা এখন অস্বীকার করছেন। মুলত আমাকে সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করতে রাজী নন তিনি (বদি)। ফলে যা যা করার তাই করছেন। অথচ আমি আদালতে বার বার বলে আসছি ডিএনএ পরীক্ষা করে যদি আবদুর রহমান বদি আমার পিতা প্রমাণ না হয় তাহলে আমি আদালতের দেয়া সকল প্রকার শাস্তি মেনে নেব।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গত ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার ২৭ বছর বয়সী যুবক মোহাম্মদ ইসহাক কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে নিজের বাবা দাবি করে টেকনাফের সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বদি ছাড়াও মূল-বিবাদী করা হয়েছে বদির আপন চাচা টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলামকে। মামলাটি আদালতে এখনো বিচারাধীন রয়েছে।

মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, মামলা স্বাভাবিক গতি-প্রক্রিয়ায় এগোলে তিনি পিতৃত্বের স্বীকৃতি পাবেন। আমি কোন ভাবে স্বীকৃতি না নিয়ে ফিরবো না। আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকাবে।

আদালতে দায়ের করা মামলায় বলা হয়, গত ৩০ বছর আগে টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ ধুমপাড়ার বাসিন্দা আবুল বশরের মেয়ে সুফিয়া খাতুনকে সাবেক সংসদ সদস্য বদি গোপনে বিয়ে করেন। বাদী তার মায়ের পেটে আসার খবর জানতে পেরে তাকে পেটে থাকতে হত্যার চেষ্টা চালান বদি। তাতে সফল না হয়ে সুফিয়াকে স্থানীয় এক রাজ মিস্ত্রীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এসময় সুফিয়ার পেটে বাচ্চা থাকার কথা গোপন রাখা হয়। পরে জানতে পেরে সেই স্বামী সব মেনে নিয়ে সংসার করেন। এরপরও বাচ্চাসহ সুফিয়াকে হত্যার চেষ্টা করতো বদির পরিবার। এজন্য তারা প্রায় সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিয়ে জীবন ধারণ করে। এসব বিষয় উল্লেখ করে সুফিয়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। তাদের দাবি ইসহাক বদির সন্তান, তাকে যেন মেনে নিয়ে সন্তানের মর্যাদা দেয়া হয়। বাদী ও তার মায়ের দাবি অনুসারে আব্দুর রহমান বদির প্রথম সন্তান ইসহাক। তার অবয়ব, আচরণ সবকিছু বদির অবিকল কপি বলে উল্লেখ করেছেন ওয়াকিবহাল মহল।

বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার জেলা দায়ের ও জজ আদালতের পাবলিক প্রসিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, এ মামলাটি দায়ের করার পর বিবাদীকে নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু ঠিকানা জটিলতার কারণে নোটিশটি বিবাদীর হাতে পৌঁছেনি। নোটিশ প্রাপ্তি না হওয়ার কারণে মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়েছে।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি কোন কথাই বলতে রাজী নন। গত ২ বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে তিনি এড়িয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ সোমবারও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যমের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে রাজী হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888