সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
চকরিয়া প্রতিবেদক : চকরিয়া পৌরসভার মাস্টারপাড়ার পাড়ার কবরস্থান থেকে এক ব্যবসায়ীর কঙ্কাল উত্তোলন করা হয়েছে দাফনের ৩৫৪ দিন পর।
মঙ্গলবার(১০ অক্টোবর) দুপুরে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত উজ জামানের নেতৃত্বে পুলিশ কঙ্কাল উত্তোলন করেন।
কঙ্কালটি ব্যবসায়ী সোহেল উদ্দিনের। তিনি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডস্থ সোসাইটিপাড়ার মৃত সামশুল আলমের ছেলে। মৃত্যুর পূর্বে তিনি চকরিয়া পৌরশহরে ‘মা সার্জিক্যাল’ নামের একটি দোকান করতেন।
সোহেল উদ্দিন ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর দিবাগত ১২ টা থেকে ৩ টার মধ্যে মারা যান। এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁর স্ত্রী সাফিয়া জান্নাত বাদি হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলা (ফৌজদারী অভিযোগ) দায়ের করেন। সিআর(৪০৮/২০২৩) মামলায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার আইনজীবী হাবিব উদ্দিন মিন্টু বলেন, ‘গত বছরের ২১ অক্টোবর ব্যবসায়ী সোহেল উদ্দিন মারা যান। তখন প্রচার করা হয় তিনি স্ট্রোকে মারা গেছেন। একারণে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। পরবর্তীতে সোহেলের স্ত্রী বুঝতে পারেন তাঁর স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর জের ধরে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি কাউছার
আকতার নামের এক নারীকে প্রধান আসামি করে আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশকে(সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দেন।’
মামলার বাদী সাফিয়া জন্নাত বলেন, ‘ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে আমার স্বামীকে গত বছরের ২১ অক্টোবর রাত ১০ টায় চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন আলহাজ্ব নবীহোছনের বাস ভবনে ফোন করে ডেকে নিয়ে যান। ওই রাত ১২ টা থেকে ৩ টার মধ্যে আমার স্বামীকে হত্যা করে প্রাইভেট হাসপাতাল জমজমে নিয়ে যায় তারা। ওইসময় আমাকে ফোন করে জানায়, আমার স্বামী স্টোক করেছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পাই, ফ্লোরে আমার স্বামীর নিথর দেহ পড়ে আছে। ওইসময় হাসপাতাল কতৃপক্ষ আমাকে জানায়, এক মহিলাসহ কয়েকজন ব্যক্তি আমার স্বামীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে গেছে।’
মামলার বাদী আরও বলেন, ‘আমার স্বামীর মৃত্যুর পরই হত্যা করা হয়েছে সন্দেহ হওয়ায় চকরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে প্রভাবশালীদের চাপে পুলিশ মামলা নেয়নি। হত্যায় জড়িতরা তড়িগড়ি করে দাফন করে ফেলে আমার স্বামীকে। এরপরও আমার দুই শিশু সন্তানসহ আমাকে নানাভাবে হুমকির মুখে রাখায় আইনের আশ্রয় নিতে বিলম্ব হয়েছে।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, ‘থানায় মামলা করতে চাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। ওইসময় আমি চকরিয়া থানায় কর্মরত ছিলাম না।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার তদন্তের স্বার্থে ও হত্যা করা হয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে সোহেলের লাশ কিংবা লাশের অবশিষ্টাংশ কবর থেকে তোলে ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। এজন্য কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য গত ৯ এপ্রিল অনুমতি চাওয়া হয়। আদালত সবকিছু বিবেচনা করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর লাশ উত্তোলনের অনুমতি দেন।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত উজ জামান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুর একটায় চিরিংগা মাস্টারপাড়া কবরস্থান থেকে সোহেলের লাশ (কঙ্কাল) উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply