রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিটি কেন্দ্রে সারিবদ্ধ শিশুরা। একে একে কেন্দ্রে প্রবেশ করে নির্ধারিত প্রক্রিয়া শেষ করে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করছেন। কেন্দ্রের ভেতরে এজেন্স, প্রিসাইর্ডং, পোলিং এজেন্সরা দায়িত্ব পালন করছেন স্বাভাবিক নিয়মে। রয়েছেন দেশী-বিদেশী পর্যাবেক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী।
কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ৮ টি কেন্দ্রে সকাল ৯ টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোট গ্রহণ শেষ হয় বিকাল ৩ টায়। এরপর ভোট গণণা শেষে ঘোষণা করা হয় ফলাফল।
এইভাবে শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনায় ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ হলো কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়ন শিশু পরিষদ নির্বাচন।
ওই ইউনিয়নে ৪১২৫ জন ভোটারের মধ্যে ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্বিতা করে। তন্মধ্যে মেয়ে ১৬ জন, ছেলে ৯ জন।
বাহারছড়া ইউনিয়নের ২৫২টি শিশু পরিষদের কিশোর কিশোরীদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ইউনিয়ন শিশু পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে অ্যাকশন মিডিওর এর আর্থিক সহযোগিতায় ‘কিশোর-কিশোরী এবং প্রবীণদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন প্রকল্প’ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করে শিশুদের এই নির্বাচন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আয়োজকরা জানান, এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত হয়ে শিশুরা গণতান্ত্রিক ভোট প্রদানের মাধ্যমে তাদের যোগ্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং একইসাথে ওয়ার্ড চেয়ারম্যান নির্বাচন করলো। ভোটে তাসলিমা মুনির রিতা (চেয়ার মার্কা) প্রাপ্ত ৭৪৮ ভোট পেয়ে ইউনিয়ন শিশু পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ওমর ফারুক পেয়েছেন (ছাতা মার্কা) ৭০৭ ভোট।
এছাড়া ওয়ার্ড চেয়ারম্যান যারা নির্বাচিত হয়েছেন-মিনা আকতার প্রতীক দোয়াত-কালি) প্রাপ্ত ভোট ২৭১, ২নং ওয়ার্ড মোহাম্মদ আলমগীর প্রতীক (টেলিভিশন) প্রাপ্ত ভোট ২০৮, ৩নং ওয়ার্ড আহসান মোহাম্মদ রাব্বী (মোরগ) প্রতীক নিয়ে ২৪৩ ভোট, ৪নং ওয়ার্ডে মেহের আফরোজ মুনা (বই) প্রতীক নিয়ে ২৩২ ভোট, ৫নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শরিফ (মোরগ) প্রতীক নিয়ে ১৮৩ ভোট, ৬নং ওয়ার্ডে আজিজা আলিম পুষ্পা (মোরগ) প্রতীক নিয়ে ৩১০ ভোট, ৭নং ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম (বই) প্রতীক নিয়ে ২৬৫ ভোট ও ৮নং ওয়ার্ডে আহম্মদ (বই) প্রতীক নিয়ে ২০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
এই নির্বাচন সম্পূর্ণ করতে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ফজলুল করিম। রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন-নার্গিস আকতার রনি, সহকারী নির্বাচন কমিশনার ছিলেন, ফরিদুল আলম বাহারী ও জাকের হোসেন।
পুরো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও কেন্দ্র পরিদর্শন করেন-এ্যাকশন ম্যাডিও’র প্রজেক্ট ম্যানেজার শারাহ ওয়িস ও গণস্বাস্থ্য এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সুলতান মাহমুদ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার শিক্ষাবিদ প্রফেসর ফজলুল করিম বলেন, শিশুরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত হয়ে তাদের পছন্দমত নেতা নির্বাচন করেছে। শিশুরা সংখ্যা গড়িষ্ঠের মতামতকে শ্রদ্ধা জানাতে শিখেছে, পরমতের প্রতি সহনশীল হতে শিখেছে। তারা জয় পরাজয় মেনে একে অপরকে সাথে নিয়ে কাজ করার অঙ্গিকার করেছে। তাদের দেখে অন্যরা শিখবে। এভাবে তাদের মধ্যে বিকল্প আরো যোগ্য নেতা তৈরি হবে। এই প্রক্রিয়ায় তারা বড় হলে একদিকে নিজেদেরকে তারা আরো যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারবে এবং তারা যে জায়গায় কাজ করবে সেখানেও তারা তাদের যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সুন্দর একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
নির্বাচিত ইউনিয়ন শিশু পরিষদের চেয়ারম্যান তাসলিমা মুনির রিতা বলেন, একদম শিশু বয়স থেকে নেত্বত্ব দেয়ার সংকল্প ছিল তা আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। শিশু শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ ও উন্নয়নের কথা স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার ও প্রশাসনের সাথে আলাপ আলোচনা করে এগিয়ে নেয়ার কথা জানান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঝড়েপড়া শিক্ষার্থী, ইভিটিজিং প্রতিরোধ, অসহায়-গরিবদের সহযোগিতা করাসহ নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
৩নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফা আলম সুইটি বলেন, এ নির্বাচন ভবিষ্যত প্রজন্মকে গণতন্ত্র শিক্ষা দিবে। আজকের শিশুরাই সমাজে দেশে নেত্বত্ব দিবে। ব্যালট বিপ্লব এখান থেকে শুরু করলে আগামীতে সবখানে সকল নাগরিকের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারব।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply