শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : মহেশখালীতে ‘শিশুকে খৎনা করার সময় পুরুষাঙ্গ’ কেটে ফেলার অভিযোগে দায়ের মামলার আসামি কথিত চিকিৎসকসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল খাইরুল ইসলাম সরকার জানান, মঙ্গলবার ভোরে মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহী পাড়ায় এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হল, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহী পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৫) ও তার ভাই মিজানুর রহমান (২৮)।
ভূক্তভোগী শিশু মো. সাইফুল ইসলাম (৮) মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা এলাকার মো. মঞ্জুর আলমের ছেলে।
র্যাব জানিয়েছে, কথিত পল্লী চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহী পাড়ায় মেসার্স জাহেদ মেডিকো নামের একটি ফার্মেসীতে চেম্বার খুলে রোগীর চিকিৎসা করতেন। আর ওই ফার্মেসীতে তার (জয়নাল) ছোট ভাই মিজানুর রহমান সহকারি হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেপ্তার দুইজনই মামলার এজাহারভূক্ত আসামি।
গত ১০ ফেব্রুয়ারী ভূক্তভোগী শিশুটির বাবা মো. মঞ্জুর আলম বাদী হয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও তার সহকারিকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারের বরাতে খাইরুল বলেন, গত বছর ২৮ নভেম্বর শিশু মো. সাইফুল ইসলামকে খৎনা করানোর জন্য তার দাদা-দাদী ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহী পাড়াস্থ মেসার্স জাহেদ ফার্মেসীতে নিয়ে যান। পরে সেখানে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত জয়নাল আবেদীনের তত্ত্বাবধানে শিশুটির খৎনা করানো হয়।
“ খৎনা করার সময় চিকিৎসা নামধারী জয়নাল আবেদীন ও তার সহকারি মিজানুর রহমান শিশুটির পুরুষাঙ্গ সম্পূর্ণ কেটে ফেলে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এসময় শিশুটির দাদা-দাদীকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে ক্ষতস্থান ব্যান্ডেজ করিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দেন। ”
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, “ শিশুটিকে বাড়ী নিয়ে আসার পর আবারও রক্তক্ষরণ শুরু হলে কান্নাকাটি শুরু করে। পরবর্তীতে খৎনা করানো চিকিৎসক নামধারী জয়নালের সঙ্গে শিশুটির স্বজনরা যোগাযোগ করলে জানায়, ঔষুধপত্র দেওয়া হয়েছে; ওইগুলো সঠিক মতসেবন করলে সবকিছু সেরে যাবে। এরপরও রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় শিশুটিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসার পরও উন্নতি না হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। দীর্ঘ ৩ মাসের বেশী সময় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসার পর শিশুটি এখন বাড়ীতে অবস্থান করলেও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। ”
এ ঘটনায় গত ১০ ফেব্রুয়ারী শিশুটির বাবা মো. মঞ্জুর আলম বাদী হয়ে অভিযুক্ত দুইজনকে আসামি করে মহেশখালীর জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করে বলে জানান খাইরুল ইসলাম।
মামলার বাদীর অভিযোগের বরাতে তিনি জানান, মামলা দায়ের করার পর থেকে আসামিরা মামলা তুলে নিতে বাদী ও স্বজনদেরকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। অন্যথায় তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিওদেওয়া হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তার ভাষ্য, “ স্বজনদের কাছে অভিযোগটি পাওয়ার পর থেকে র্যাব সদস্যরা আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার ভোরে আসামিরা ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহী পাড়ায় নিজেদের বাড়ীতে অবস্থান করছে খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে বাড়ী থেকে মামলার এজাহারভূক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ”
গ্রেপ্তার আসামিদের মহেশখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান লে. কর্ণেল খাইরুল।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply