শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : রামুতে ‘রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার’ এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রামু থানার ওসি মো. আনোয়ারুল হোসাইন জানান, সোমবার সকালে রামু উপজেলার রাজারকূল ইউনিয়নের রাংকূট ঘোনার পাড়া থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইমন বড়ুয়া (২২) রামুর রাজারকূল ইউনিয়নের রাংকূট ঘোনার পাড়ার সুনীল বড়ুয়ার ছেলে।
তবে নিহত যুবকের শরীরের আঘাতের কোন চিহ্ন না থাকায় মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে পারেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আনোয়ারুল বলেন, সোমবার সকালে রামুর রাজারকূল ইউনিয়নের রাংকূট ঘোনার পাড়ায় জনৈক সেলিম উদ্দিনের দোকানের নিচে একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোকানের নিচে মাটিতে চিৎ হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
” ফসলি জমিতে খুঁটির উপর গাছের তক্তা দিয়ে মাঁচার মত করে দোকানটি তৈরী করা হয়েছে। দোকানটির নিচেই মৃতদেহটি পড়া অবস্থায় ছিল। “
ওসি বলেন, ” যুবকটি জিন্সের ফুল-প্যান্ট পরিহিত থাকলে খালি গায়ে ছিল। মৃতদেহটির পাশ থেকে গায়ের গেঞ্জি, শীতের সোয়েটার, একটি বালতি ও একটি করাত পাওয়া গেছে। নিহতের গায়ে আঘাতের কোন চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে মৃতদেহ উদ্ধারের সময় ডান হাতে একটি ধরা অবস্থায় পাওয়া যায়। আর হাতটির দুইটি আঙ্গুলের ফোঁসকার মত কিছু অংশের চামড়া উঠে গেছে। “
আনোয়ারুল জানান, ” আঘাতের কোন চিহ্ন না থাকায় যুবকটির মৃত্যু রহস্যজনক। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। “
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ মাস আগে নিহত ইমন বড়ুয়ার সঙ্গে রামু সদরের হাইটুপি এলাকার বাসিন্দা আশীষ বড়ুয়ার মেয়ে জয়ন্তী বড়ুয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক সূত্রে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন ধরণে ঝগড়া-বিবাদও ছিল না।
ইমন বড়ুয়ার স্ত্রী জয়ন্তী বড়ুয়া বলেন, রোববার রাতে কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসার কথা বলে বাড়ী থেকে বের হয় ইমন। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষার পরও ফিরে না আসায় তিনি সারারাত একাধিকবার স্বামীর মোবাইলে কল দেন।
” মোবাইল ফোনে রিং বাজলেও ইমন ফোন ধরেনি। আবার সকালে যখন আমি আবারও ফোন করি তখন মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি আমি শ্বশুর-শ্বাশুরিকে অবহিত করি। “
সকালে এক পর্যায়ে জনৈক সেলিমের দোকানের নিচে ইমনের মৃতদেহ পড়ে থাকার বিষয়টি স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পান বলে জানান নিহতের স্ত্রী।
জয়ন্তী জানান, রাতে বাড়ী থেকে বের হওয়ার সময় ইমনের গায়ে গেঞ্জি, শীতের সোয়েটার ও জিন্সের ফুল-প্যান্ট পরিহিত ছিল। বের হওয়ার সময় বাড়ী অন্য কোন জিনিসও সঙ্গে নেয়নি । কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের সময় প্যান্ট পরিহিত থাকলেও খালি-গা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞাননন্দ ভিক্ষু বলেন, ইমনের এই অকাল মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে করেন না। স্বজনদের দেয়া তথ্য মতে তার লাশ পাওয়ার ঘটনাটি রহস্যজনক।
পুরো ঘটনাটি রহস্যজনক হওয়ায় এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন এ বৌদ্ধ পুরোহিত।
ওসি আনোয়ারুল জানান, সোমবার বিকালে নিহতের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply