রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ায় ছিনতাইকালে ‘বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা’ এক এপিবিএন সদস্যকে স্থানীয় জনতা ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে; এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এপিবিএন এর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত এপিবিএন সদস্য গত ৪ মাস ধরে কর্মস্থল থেকে বিনানুমতিতে অনুপস্থিত রয়েছেন। এর আগে গত মার্চ মাসেও ছুটিতে গিয়ে অতিবাসের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়; যা এখন তদন্তাধীন।
উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দিন জানান, শনিবার রাতে উখিয়ার ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ফারুক নামের এক ব্যক্তি বাদী অভিযুক্ত এপিবিএন সদস্যের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন।
আসামি নিরঞ্জন দাস (২৮) উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার মেঘার কান্দি এলাকার রায় কান্ত দাসের ছেলে।
মামলার এজাহারের বরাতে সালাহ উদ্দিন বলেন, শনিবার বিকালে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন রোডের পিছনের গলিতে এশটি সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে অবস্থান করছিলেন কর্মস্থলে বিনানুমতিতে অনুপস্থিত থাকা এপিবিএন সদস্য নিরঞ্জন দাস। এক পর্যায়ে ওই গলি দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় মোহাম্মদ ফারুক নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে থামিয়ে তিনি নিজেকে এপিবিএন সদস্য বলে পরিচয় দেন।
পরে তার (ফারুক) ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেটটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এতে রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ ফারুক শোর-চিৎকার শুরু করলে ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত লোকজনের কাছে এপিবিএন সদস্য পরিচয় দানকারি ব্যক্তির কথাবার্তা ও আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আটক করে পুলিশকে খবর দেন।
“ পরে এপিবিএন সদস্য পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির দেহ তল্লাশী করে ছিনতাই করা ২ টি মোবাইল সেট, ১ টি ছোরা ও এপিবিএন সদস্যের ১ টি পরিচয়পত্র উদ্ধার করে স্থানীয় জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ”
পরিদর্শক (তদন্ত) বলেন, শনিবার রাতে এ ঘটনায় ভূক্তভোগী রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ ফারুক বাদী হয়ে অভিযুক্ত এপিবিএন সদস্যেও বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে আসামি কনস্টেবল নিরঞ্জন দাসকে এপিবিএন সদস্য বলে স্বীকার করলেও তিনি গত সেপ্টেম্বর থেকে কর্মস্থলে বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত (পলাতক) রয়েছেন বলে জানান ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক।
নাইমুল বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত এপিবিএন সদস্য নিরঞ্জন দাস গত বছর মার্চ মাসে ছুটিতে গিয়ে বিনানুমতিতে অতিবাস যাপন করেছেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গত ১৮ মার্চ বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছে। যার মামলা নম্বর ০৭/২০২১।
“ এছাড়াও গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কনস্টেবল নিরঞ্জন দাস বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এরপর ওইদিনই তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান সিসি (কমান্ড সার্টিফিকেট)-০২/২০২১ দায়ের করে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নেওয়া হয়। তাকে কর্মস্থলে উপস্থিত হতে তিন দফায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও সন্ধান না পাওয়ায় সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর তার (নিরঞ্জন দাস) বাবা রায় কান্ত দাশ বরাবরে নোটিশ জারি করা হয়েছিল। ”
এপিবিএন এর এ কর্মকর্তা ধারণা করে ভাষ্য দিয়েছেন,“ নিরঞ্জন দাস হয়তো মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়েছেন। প্রাথমিক খোঁজ-খবওে জানা গেছে, তিনি অনলাইনে জুয়া খেলায় আসক্ত ছিলেন। পাশাপাশি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। ”
উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দিন জানান, রোববার দুপুরে আটক ব্যক্তিকে কক্সবাজার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply