রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন
চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল এলাকার দাঙ্গার বিলে মাটি ও বালু উত্তোলনের নামে কৃষিজমি, বনভুমি ও নদী ধ্বংস কার্যক্রম বন্ধ করতে দুই সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১৩ সরকারী কর্মকর্তাকে আইনী নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) এবং ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) নামের দুইুট পরিবেশবাদী সংগঠন।
৬ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) ডাকযোগে সংগঠন দুটির পক্ষে নোটিশটি পাঠিয়েছেন বেলা ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি এস হাসানুল বান্না।
নোটিশে রংমহল এলাকার দাঙ্গার বিলে ইতোমধ্যে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে সেসব গর্তের সৃষ্টি ও জলাধার ভরাট করা হয়েছে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে নোটিশ প্রেরণের সাত দিনের মধ্যে গৃহীত পদক্ষেপ সংশ্লি আইনজীবিকে জানানোরও অনুরোধ জানানো হয়, অন্যথায় এক জনপ্রতিনিধিসহ ১৩ সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ), পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকেও একই নোটিশ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলা ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি এস হাসানুল বান্না বলেন, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলাধীন ডুলাহাজারা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত রংমহল গ্রামের সন্নিকটে রয়েছে প্রায় ৫০০ একর আয়তনের একটি ”বিল” যা ‘দাঙ্গার বিল’ নামে পরিচিত। এ বিলের পার্শ্বে টিলা শ্রেণীর পাহাড়ও রয়েছে। বিলের চতুরপার্শে¦ রয়েছে সংরক্ষিত বনভূমিও সৃজিত সামাজিক বনায়ন।
বিলটির একপাশে গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। সম্প্রতি এ বিলের টিলা ও সমতল ভূমির মাটি এস্কেভেটর দিয়ে কেটে ফেলা হচ্ছে এবং শক্তিশালী ড্রেজারের মাধ্যমে ৫০-৬০ ফুট গভীর থেকে বালু তোলা হচ্ছে মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ মাটি ও বালু পরিবহনের লক্ষ্যে ভরাট করা হয়েছে প্রায় ৪০০০ ঘনফুট আয়তনের একটি খাল। রংমহল গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বগাইছড়ি নামক ছড়ার বউঘাটা পয়েন্টে মাটি ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পানির প্রবাহ এবং ছড়ার ওপর তৈরি করা মাটির বাঁধ কাম সড়কের ওপর দিয়ে ট্রাকযোগে পরিবহন হচ্ছে ট্রাক মাটি ও বালু। টিলা ও সমতল ভূমি কেটে গর্ত করে মৎস্য চাষের জন্য পুকুর খনন করছে মর্মেও সংবাদে উল্লেখ রয়েছে। ফলশ্রুতিতে উল্লেখিত এলাকায় মারাত্বক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী প্রতিদিন ট্রাকযোগে মাটি ও বালু পরিবহনের ফলে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে ডুলাহাজারা-বগাইছড়ি সড়কে। ধুলো মিশ্রিত বায়ু দূষণে অতিষ্ঠ রংমহল গ্রামবাসীগণ। বর্ষায় ভূমিধসের আশঙ্কায় রয়েছে এই এলাকার অধিবাসীরা। সেইসাথে সীমানা প্রাচীর ধসে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। তাই স্থানীয় জনগণের পক্ষে হয়ে বেলা ও ইয়েস এ আইনী উদ্যোগ নিয়েছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply