শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ অপরাহ্ন
শাহ নিয়াজ
আজ তৃতীয় ধাপে কক্সবাজার জেলা দুটি উপজেলার মোট ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যেই নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে আইনশৃংখলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা ইতোমধ্যেই এলাকায় পৌঁছে গেছে। নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আজ যে ১৬টি ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ করা হবে সেগুলে হলো, চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল, কোনাখালী, সাহারবিল, পশ্চিম বড় ভেওলা, বদরখালী, পূর্ব বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, ভেওলা মানিকচর, কাকারা ও লক্ষ্যারচর এবং পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী, পেকুয়া সদর, মগনামা, উজানটিয়া, বারবাকিয়া ও শীলখালী।
ইউনিয়ন গুলোর ভোটার সংখ্যা, ভোট কেন্দ্র, বুথ ও প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ঃ
কৈয়ারবিল ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৩ হাজার ৬৪২ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ১৯৫ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৪৪৭ জন। ভোট কেন্দ্র ১০টি, বুথ ৩৬টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৯ জন।
কোনাখালী ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১২ হাজার ১৪৬ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৪১৫ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৭৩১ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৩২টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭ জন।
সাহারবিল ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৩ হাজার ৪৮২ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩৭৪ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ১০৮ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৩৩টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭ জন।
পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন – মোট ভোটার ৬ হাজার ৪৯১ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ হাজার ৪৭০ জন এবং নারী ভোটার ৩ হাজার ২১ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ১৮টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ জন।
বদরখালী ইউনিয়ন – মোট ভোটার ২০ হাজার ৪৮৮ জন। তারমেধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৮২৭ জন এবং নারী ভোটার ৯ হাজার ৬৬১ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৫১টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ১০ জন।
পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৭ হাজার ৮৩৩ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৬৩৭ জন এবং নারী ভোটার ৮ হাজার ১৯৬ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৪৫টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬ জন।
ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন – মোট ভোটার ৮ হাজার ৩০৮ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৩৬৭ জন এবং নারী ভোটার ৩ হাজার ৯৪১ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ২২টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭ জন।
ভেওলা মানিকচর ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৩ হাজার ৭২১ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩৬০ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৩৬১ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৩৩টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ জন।
কাকারা ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৫ হাজার ৩৬৩ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৮৭ জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ২৭৬ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৪০টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন।
লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন – মোট ভোটার ৬ হাজার ১৮৮ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ হাজার ২০০ জন এবং নারী ভোটার ২ হাজার ৯৮৮ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ১৯টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ জন।
রাজাখালী ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৬ হাজার ৮৮০জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ১৩৪ জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৭৪৬ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৫৩টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬ জন।
পেকুয়া ইউনিয়ন – মোট ভোটার ৩০ হাজার ১৪৯ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৯৭০ জন এবং নারী ভোটার ১৪ হাজার ১৭৯ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৮০টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ১০ জন।
মগনামা ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১৪ হাজার ৪৬৮ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৭৬৮ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৭০০ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৪৫টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ১২ জন।
উজানটিয়া ইউনিয়ন – মোট ভোটার ৯ হাজার ৭৪৯ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ১৭৪ জন এবং নারী ভোটার ৪ হাজার ৫৭৫ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৩১টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭ জন।
বারবাকিয়া ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১২ হাজার ৮৪৪ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৮৪৮ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৯৯৬ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৪১টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন।
শালীখালী ইউনিয়ন – মোট ভোটার ১০ হাজার ১৬১ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ২৮৩ জন এবং নারী ভোটার ৪ হাজার ৮৭৮ জন। ভোট কেন্দ্র ৯টি, বুথ ৩৫টি। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬ জন।
এদিকে কড়া নজরদারির মধ্য দিয়ে চকরিয়া উপজেলার ১০ ইউপিতে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জানা যায়, এবার চকরিয়া তৃতীয়ধাপের ইউপি নির্বাচনে ১০ ইউনিয়ন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৬৪ জন, সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে ১৩২ জন ও সাধারণ ইউপি সদস্য পদে ৩৬৬ জন প্রার্থী এই ভোট যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছেন। নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ সদস্য, ১৭ আনসার সদস্য থাকবে। চকরিয়ায় ৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য, ৪০জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে টহলে থাকবে। সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবেন ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও র্যাবের ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশের দুটি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স একইসাথে প্রতিটি ইউনিয়নে নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। অতিঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রেগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সুষ্ঠ সুন্দর নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট, যথাযথ ভাবে যাচাই বাছাই করে কেন্দ্র গুলোতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, “আমরা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে ও সংঘাত এড়াতে প্রশাসনিক পর্যায়ে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সকাল ৮টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচনী সামগ্রী। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে সে যেই হোক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সে অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। মোট ৯১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩টি কেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও ৪৯টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ভোট কেন্দ্রে সংঘাতের আশঙ্কা থাকলেও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুই ইউপিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হবে।”
পেকুয়া উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক কেন্দ্রে পুলিশ, র্যাব,বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা টহল জোরদার করেছে। ৬ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৫ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৮৫ জন এবং মহিলা সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন ২৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি ও সাড়ে ৩ শত পুলিশ সদস্য। এছাড়াও র্যাব-১৫ এর একটি চৌকস দল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে নিয়মিতভাবে কেন্দ্র টহলে থাকবে।
র্যাব-১৫ এর কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল খাইরুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সার্বিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা কাজ করে যাব এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য র্যাব-১৫ কাজ করবে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ও জোর করে ব্যালট ছিনিয়ে নিতে চাইলে কঠোরভাবে দমন করবে র্যাব-১৫।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, পেকুয়ার ৬ ইউনিয়নে অবাধ,সুষ্ট ও নিরেপক্ষ সহিংসতামুক্ত নির্বাচন সম্পন্ন করতে সার্বিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আশাকরি ভোটাররা নির্বিঘেœ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারবে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply