বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সপ্তম দফায় প্রথম দিনে ৬০ তম সাক্ষির জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
সপ্তম দফায় প্রথমদিনে আদালতে উপস্থাপন করা সাক্ষিরা হল, এসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল মোশারফ হোসেন, সার্জেন্ট মো. আয়ুব আলী, পরিদর্শক মানস বড়ুয়া, পরিদর্শক এ বি এম শামসুদ্দোহা এবং মামলার প্রথম তদন্তকারি কর্মকর্তা সহকারি পুলিশ সুপার মো. জামিলুল হক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ বিচারকাজ শুরু হয়।
এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। পরে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনে চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তৃতীয় দফায় তিন দিনে পর্যন্ত ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলায় চতুর্থ দফায় দুই দিনে ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। পঞ্চম দফায় তিন দিনে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ষষ্ঠ দফায় দ্বিতীয় সাক্ষ্য দেন আরো ২৪ জন। সপ্তম দফায় প্রথম দিনে মামলায় ৬০ তম সাক্ষির জবানবন্দি গ্রহণ করা হচ্ছে। মামলায় আরো ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ অবশেষ রয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজেন ভ্যান করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
পিপি ফরিদুল বলেন, মামলায় সাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত সবাইকে আদালত নোটিশ দিয়েছিলেন। গত ২৩ আগস্ট থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এতে ষষ্ঠ দফা পর্যন্ত ৫৯ জনের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে।
” সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সপ্তম দফায় প্রথম দিনে ৬০ তম সাক্ষি হিসেবে কক্সবাজার সদর থানায় তৎসময়ে কর্মরত এসআই কামাল হোসেনের জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়েছে। তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত সিনহার মরদেহের পোষাকসহ অন্যান্য মালামাল জব্দ করেছিলেন। “
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, সোমবার সপ্তম দফায় প্রথম দিনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৬০ তম সাক্ষিসহ ৬ জন সাক্ষিকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলার তদন্ত ভার দেয়া হয় র্যাবকে।
ঘটনার ৬ দিন পর ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৭ পুলিশ সদস্য আত্মসমপর্ণ করেন।
ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
পরে র্যাব পুলিশের দায়ের মামলার ৩ সাক্ষি এবং শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) এর ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। সর্বশেষ গত ২৪ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব।
গত বছর ১৩ ডিসেম্বর র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারি পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষি করা হয় ৮৩ জনকে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply