সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফে বস্তাবন্দি শিশু হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ২ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কক্সবাজারে শহীদদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও অনুদান প্রদান করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ কুতুবদিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস পালিত টেকনাফে নিখোঁজ মেয়ে শিশুর বস্তিাবন্দি মরদেহ উদ্ধার ৩৫ হাজার ইয়াবা সহ পুলিশ কনস্টেবল সহ আটক ২ সেনা কর্মকর্তারা ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাপ্রাপ্ত : মব জাষ্টিস নিন্দনীয় ৪৮ মামলার আসামী জিয়াবুলের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান : অস্ত্র উদ্ধার টেকনাফে ৩১ দখলদারের থাবায় ১৪ বছরে নিশ্চিহ্ন ৩০০ বছরের পুরোনো বৌদ্ধ বিহার আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

রামুতে নৌকার ভরাডুবির নেপথ্যে এমপি কমল

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সদর- রামু আসনের আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের কারণেই রামু উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচণে নৌকার ভরাডুবি ঘটেছে ।

ওই উপজেলার নির্বাচণের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৪ টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, ৬ টি ইউপিতে এমপি কমলের অনুসারী এবং অপরটিতে উপজেলা আওয়ামীলীগর সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজলের অনুসারী বিজয়ী হয়েছেন।

এবিষয়ে রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল বলেন, এবারের ইউপি নির্বাচণে প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমপি কমলের অনুসারীরা নির্বাচন করেছে। এমপি কমলের অনুসারীদের নির্বাচন থেকে সরানো না গেলে নৌকার ভরাডুবি হতে পারে এমনটা আমি জেলা ও কেন্দ্রকে অবহিত করেছিলাম।

রামু উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সাংসদ কমলের বিশ্বস্ত সূত্র মতে, রামুর প্রানকেন্দ্র ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি’র অনুসারী সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

ঈদগড় ইউনিয়নে এমপি কমলের অনুসারী রামু উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে এমপি কমলের অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও
বর্তমান চেয়ারম্যান ( ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত ) আবু মো. ইসমাঈল নোমান (আনারস), কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে এমপি কমলের অনুসারী সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান শামশুল আলম বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। রাজারকুল ইউনিয়নে এমপি কমলের অনুসারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

রশিদনগর ইউনিয়নে এমপি কমলের অনুসারী ও সাবেক ইউয়িনয়ন বিএনপির সহ সভাপতি এবং বর্তমান চেয়ারম্যান এম ডি শাহ আলম বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

খুনিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির অনুসারী আবদুল হক (চশমা) বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

এবিষয়ে রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল বলেন, ফতেখারকুল রামু প্রানকেন্দ্র। এই ইউনিয়নেই উপজেলার সকল দাপ্তরিক অফিস। এখানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে এমপি কমল তার দুজন অনুসারীকে দাড় করায়। এভাবে প্রতিটি ইউপিতে এমপি কমলের এক বা একাধিক অনুসারী নৌকাকে হারানোর জন্য প্রার্থী হয়।

তিনি আরো বলেন, সাইমুম সরওয়ার কমল রামুতে আওয়ামলীগ করেনা। এমপি লীগ করে। নিজের ক্ষমতা অটুট রাখতেই এমপি কমল কৌশলে নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করেছে।

এদিকে রামুতে নৌকার পরাজয়ের জন্য এমপি কমলকে দায়ী করে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছেন এমপি’র ছোট ও কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের সভাপতি তানভীর সরওয়ার রানা। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন “ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন নির্বাচনে রাজাকার পুত্রের কাছে বঙ্গবন্ধু’র “নৌকাকে” পরাজিত করে কার লাভ হল? রামু ঊপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের ভরাডুবির মূল কারণ, অত্র অঞ্চলের সাংসদের স্ববিরোধী ষড়যন্ত্র আর কালোটাকার অপব্যবহার। প্রায় প্রতিটি আসনে তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জামাযাত-বিএনপির প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। আপন পরিবারের বিরুদ্ধে সাংসদের বারেবারে এমন ষঢ়যন্ত্র স্থানীয় আওয়ামীগকে অস্থিত্ব সংকটে ফেলেছে। নৌকা ডুবিয়ে, ২য় টুঙ্গিপাড়া খ্যাত ফতেখাঁরকুল ইউনিনে কৌশলে ২০১২ সালে রামু বৌদ্ধ মন্দির হামলার অন্যতম সংগঠক, একজন রাজাকারপুত্রকে চেয়ারম্যন বানিয়ে সাংসদ অপমান করেছেন তাঁরই প্রয়াত বাবা ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীসহ পুরো পরিবারকে। আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুক।
মাননীয় সাংসদের কাছে আমার সবিনয়ে জিজ্ঞাসা: নিজের নৌকা প্রতীকতো ডুবিয়ে দিলেন নিজেরই ঘাটে, আগামী সংসদ নির্বাচনে আপনার উপায় কি? আপনার সুস্থ জ্ঞানের ভাবনা অত্যাবশ্যক। ধন্যবাদ। “
তিনি ছাড়া আরো অনেকেই রামুতে নৌকার ভরাডুবির জন্য এমপি কমলকে দায়ী করে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছেন।

এবিষয়ে কক্সবাজার- রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধির কারণেই আমি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে ময়দানে কাজ করতে পারিনি। তবে আমি সবসময় মন প্রানে চেয়েছি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর জয় হোক। এজন্য আমি প্রায় সকলকে আর্থিক সহযোগীতা করেছি।

তিনি আরো বলেন, রামু উপজেলা আওয়ামীলীগ ও জেলা আওয়ামীলীগের গাফলতি এবং অবহেলার কারনেই রামুতে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। তারা বিদ্রোহী প্রার্থী এবং সমর্থকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে বিদ্রোহীরা এত সাহস পেয়েছে। যদি নির্বাচণের শুরুতে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিত তবে ফলাফল অন্যরকম হত।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, যারা নৌকার বিরোধীতা করছে কিংবা বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করছে তাদেরকে দল থেকে বৃহিষ্কার করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888