শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
লোকমান হাকিম : এক সময়ের ন্যাড়া পাহাড় এখন সবুজে আবৃত। এর ঢালুতে দাঁড়িয়ে হুংকার দিচ্ছে বাঘ! খানিক দূরে সমতলে শুঁড় উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে হাতি। ডোরাকাটা জেব্রাটা সামনের পা দুটি তুলে নাচছে, সঙ্গ দিতে দুরন্ত হরিণটাও লোকালয়ে নেমেছে। ড্রাগন কিংবা বাজপাখি, ওরাও উড়ছে আকাশে।
ভাদ্রের স্বর্ণালি বিকেলে প্রাণীগুলোর ভিড়ে কোমলমতি শিশুরা খেলছে আর দুলছে। এসব শিশুদের কারও ভয় নেই। শিশুদের আনন্দ জীবন্ত হলেও প্রাণীগুলো নিষ্প্রাণ ভাস্কর্য।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা সদরের পাঁচ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের লম্বাঘোনা বাজারসংলগ্ন এলাকায় গেলে চোখে পড়বে এ দৃশ্য। এখানকার মলিন শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে ৪০ শতক সরকারি জমি উদ্ধার করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘শেখ রাসেল শিশু পার্ক’। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যেটি বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ। মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই গড়ে উঠেছে পার্কটি।
বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি জমিটি দখলে রেখেছিল। গত ২ জুলাই উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জমিটি উদ্ধার করে। এরপর সেখানে শিশুপার্ক নির্মাণের ঘোষণা দেয়। এর ২০ দিনের মধ্যেই পার্কটি যাত্রা শুরু করে।
গত শুক্রবার ছোট ভাইকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে এসেছিল ছোট মহেশখালী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া সিরাজ মাহি। সে বলে, ‘ছোট ভাইকে নিয়ে প্রতিদিন পার্কে আসি। প্রাণীগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি আর দোলনায় চড়ি। এখানে পার্ক হওয়ায় আমরা খুব খুশি।’
শুধু সামিয়াই নয়, প্রতিদিন এ পার্কে ভিড় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশু-কিশোররা। এ ছাড়া সব শ্রেণির মানুষই বিনা খরচে বিনোদন উপভোগ করতে আসেন।
কবি ও লেখক জাহেদ সরওয়ার বলেন, ‘আশা করছি দ্বীপাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসিক বিকাশে পার্কটি ভূমিকা রাখবে।’
ছোট মহেশখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিহাদ বিন আলী বলেন, পরিষদের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এলজিএসপি প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কটি নির্মিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, দারিদ্র্যপীড়িত ছোট মহেশখালীর শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে এ উদ্যোগ।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, এটি একটি ন্যাচারাল পার্ক। এখানে বিভিন্ন জীব-জন্তুর প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো দেখে শিশুরা প্রাণীগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply