রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ

‘কক্সবাজার থাকা অবস্থায় অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বাবুল, এর জের ধরে মিতুকে হত্যা’

বাংলাট্রিবিউন : সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে এবার স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। বুধবার (১২ মে) চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়েরের পর বাদী মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলায় বাবুলের বিরুদ্ধে হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় আট জনকে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিদের সঙ্গে সমন্বয় করে সে তার স্ত্রীকে হত্যা করে। কক্সবাজার থাকা অবস্থায় ২০১৩ সাল থেকে অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বাবুল। এটি নিয়ে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। ওই ঘটনার জের ধরেই সে মিতুকে হত্যা করে।’

তিনি বলেন, ‘একজন এনজিওকর্মীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। ওই নারী মিতুকে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। তার সঙ্গে বাবুল আক্তারের অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে বাবুলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয়।’

এতদিন পর কেন মামলা করলেন জানতে চাইলে মোশারফ হোসেন বলেন, ‘একটি ঘটনায় দুটি মামলা হয় না। আসামি ছাড়াও মামলা হতে পারে। আইও তদন্ত করে আসামি বের করবে। আর যেহেতু প্রথম মামলাটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তাই আমি মামলাটি দায়ের করেছি। না হলে, সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশকে মামলাটি করতে হতো। যেহেতু পুলিশ করেনি, তাই আমি মামলাটি দায়ের করেছি। আগের মামলায় কয়েকজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো এই মামলায় যোগ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে তার (বাবুল) সঙ্গে আমাদের কোনও যেগাযোগ নেই। শুনেছি সে একটা বিয়ে করেছে।’

মামলার বাকি আসামিরা হলেন—কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, সাইফুল ইসলাম সিকদার ওরফে শাকু ও শাহজাহান মিয়া। বাবুল ছাড়া এই সাত আসামি আগের দায়ের করা মামলারও আসামি ছিলেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকায় পিবিআই সদর দফতরে বাহিনীর প্রধান বনজ কুমার সাংবাদিকদের জানান, বাবুল আক্তার বর্তমানে চট্টগ্রামের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হেফাজতে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তারের করা মিতু হত্যার মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে আমাদের সামনে কিছু প্রশ্ন এসেছে। সেগুলোর সমাধান খুঁজতে গিয়ে মামলা অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। তাই বাবুল আক্তারের মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় মিতুর বাবা একটি মামলা করবেন, সেই মামলায় প্রধান আসামি হবেন বাবুল আক্তার। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে।’

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তার খ্যাতিমান পুলিশ অফিসার ছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। এই হত্যা মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এই মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। হাইকোর্টেও এই মামলা নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। তখন এই মামলাটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। সেই সময় মামলার বাদী হয়েছিলেন, মাহমুদা খানমের স্বামী বাবুল আক্তার। সেই মামলায় দুজন আসামি আনোয়ার ও ওয়াসিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে বাবুল আক্তারের কোনও সম্পৃক্ততা আসেনি। দেড় বছর ধরে কোভিড-১৯-এর কারণে তদন্তে কিছুটা বিলম্ব হয়। মামলাটি নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে, দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। তাই মামলাটি নিষ্পত্তি করতে কিছু প্রশ্ন আমাদের সামনে আসে। সেই প্রশ্নগুলো সমাধান করতে গিয়ে মামলাটি অন্যদিকে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

বাবুল আক্তারকে গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বাবুল আক্তার মামলার বাদী। বাদীকে ইচ্ছা করলেই গ্রেফতার করা যায় না। বিষয়টি মামলাটির ভালোমন্দের সঙ্গে জড়িত। তার অনেক কথা বলার আছে। ভিকটিম পরিবারের পক্ষে তিনিই দৌড়াদৌড়ি করেছেন। যদি বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করতে হয়। তাহলে বাবুল আক্তারের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। বাবুল আক্তারের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রাম পিবিআইয়ের পুলিশ প্রস্তুত করেছে। সেটি নিয়ে তারা আদালতে গেছেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদন যখন আদালত গ্রহণ করবেন তখন আরেকটি হত্যা মামলা হবে। সেই মামলাটি আজই (বুধবার) হবে। এই মামলাটি দুজন করতে পারেন। মিতুর সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ একজন এবং তার বাবা। মিতুর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মানুষ তার স্বামী যেহেতু পারবেন না, তাই তার বাবা মোশাররফ হোসেন মামলার বাদী হবেন। মোশাররফ হোসেন পিবিআইতে এসেছিলেন। তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। আমাদের মনে হয়েছে, তার চট্টগ্রামে যাওয়া উচিত। তাই তিনি চট্টগ্রামে গেছেন। পিবিআই তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে গেছে। বাবুল আক্তারের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মোশাররফ হোসেন একটি মামলা করবেন। সেই মামলায় এক নম্বর আসামি হবেন বাবুল আক্তার। যখনই মামলাটি দায়ের করা হবে, তখনই তিনি গ্রেফতার হবেন। বাবুল আক্তার এতক্ষণ বাদী হিসেবে পুলিশের কাছে ছিলেন।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদফতরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন বাবুল আক্তার। তবে পুলিশ তদন্তে তার সম্পৃক্ততার গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। এরপর তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888