রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন
টেকনাফ প্রতিনিধি : টেকনাফে প্রয়াত সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে টেকনাফ পৌরসভার সাইতংখিল বাড়িতে খাদ্য সামগ্রীকসহ ইউএনও পারভেজ চৌধুরী নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।
জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাইতংখিল গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মরহুম সুলতান আহমদ চৌধুরীর ছেলে সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। পেশাগতভাবে সে একজন সংবাদকর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল সকালে টেকনাফ প্রেসক্লাবের সাবেক প্রচার সম্পাদক, দৈনিক সাগর দেশ ও দূর্নীতির সন্ধানে পত্রিকার প্রতিনিধি সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী (৩৮) লিভার জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসভবনে মারা যান। মৃত্যুকালে সে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, একমাত্র কন্যা, বোন, সহকর্মীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। পারিবারিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় মানবতার জীবনযাপন করে আসছিলেন তার পরিবার।
হতদরিদ্র পরিবারের কথা নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে দৈনিক প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধি ও টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির উপদেষ্টা গিয়াস উদ্দিন ও নাফ রেডিও সাংবাদিক সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ মামুনের সঙ্গে আলাপচারিতায় একজন সাংবাদিক ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ছেলে সাইফুল ইসলামের পরিবারের কথাটি উঠে আসে। তারই সূত্র ধরে, কালবিলম্ব না করে ইউএনও পারভেজ চৌধুরী অসহায়ত্ব, শারীরিক অক্ষমতা ও কষ্টের দিনযাপন করা পরিবারের কাছে ছুটে যান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন-উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)মো সিফাত বিন রহমান, টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হোসাইন, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক সাইফুদ্দীন মোহাম্মদ মামুন ও ব্যবসায়ী বন্ধু হারুন অর রশিদ প্রমূখ।
এসময় সাংবাদিক সাইফুলের মা খতিজা বেগম (৫৫) ও সাইফুলের ১০ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে সাবরিন ইসলামের হাতে ৫ হাজার টাকার পাশাপাশি চাল ১০ কেজি,ডাল ২ কেজি, ছোলা ২ কেজি,চিনি ৩কেজি, লবণ ২ কেজি, তেল ২ লিটার, খেজুর ২ কেজি, আলু ৪ কেজি, সেমাই ১ কেজি, নুডুলস ২ প্যাকেট, মাস্ক ১ বক্স, সাবান ৫ টি, স্যানিটাইজার ৩টি নিজ হাতে তুলে দেন।
সাইফুলের মা খতিজা বেগম বলেন, আমি একজন সাবেক সহকারী কর্মকর্তার স্ত্রী ও সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর মা হিসেবে আজ গর্ববোধ করছি। তাঁর সহকর্মীদের সহযোগিতায় আজ ইউএনও সাহেব নিজে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ আর্থিক সহায়তাসহ আমার বাড়িতে আশায় আমি খুবই আনন্দিত। নিঃস্বার্থ বান সহকর্মী আছে বলেই সাংবাদিকদের পরিবারের কেহ না কেহ খোঁজখবর রাখবে বলে আশা করছি। আমার ছেলেকে স্মরণ করে ঈদ উপহার দিতে আসায় আমরা ইউএনও সাহেবের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।
টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হোসাইন বলেন, মানবিক কিছু কর্মকর্তা আছে বলে এ সমাজটিকে রয়েছে। একজন সাংবাদিকের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ আর্থিক সহায়তা নিয়ে ছুটে যাওয়ায় আমি ব্যক্তিগত ও সংগঠনের তরফ থেকে অভিবাদন জানাচ্ছি।
ইউএনও পারভেজ চৌধুরী বলেন, প্রয়াত সাংবাদিক সাইফুলের পরিবারের কথা চিন্তা করে আমার নিজ উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ তুলে দিয়েছি। এ রকম সকল অসহায়দের পার্শ্বে দাড়ানোর জন্য আমি সকলের কাছে অনুরোধ করছি। সাইফুলের মা ও মেয়েকে সর্বাত্মক সহযোগিতার পাশাপাশি তার জরাজীর্ণ ঘরটিকে দুই কক্ষের ভালো মানের ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply