বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার শহরে এ্যাম্বুলেন্সে ‘প্রেমিকার লাশ’ রেখে কথিত প্রেমিক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মৃত অবস্থায় উদ্ধার নারী ফরিদা বেগম (৩৮) বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাইশারী এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের মেয়ে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের শহীদ সরণির জইল্ল্যার দোকান এলাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকা নারীর লাশটি উদ্ধার করা হয়।
তবে ওই নারীর মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানান ওসি।
নিহত নারী ফরিদার ভাবী রাফিজা ইয়াসমিন বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে ফরিদা বেগমের সঙ্গে স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। তাদের সংসারে ১৪ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তানও রয়েছে। এরপর সে (ফরিদা) মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইতে চাকরি নিয়ে পাড়ি জমান। পরে গত ৩/৪ বছর আগে সে দেশে ফিরে আসে।
“ বিদেশ থাকতেই ফরিদা বেগমের সঙ্গে বাইশারীর মো. নোমান নামের স্থানীয় এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিদেশ থেকেও নোমানের কাছে ফরিদা টাকা পাঠাত। তার (ফরিদা) এসব টাকা দেশে নোমানের ব্যাংক একাউন্টেই জমা থাকত। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বারণ করা স্বত্তেও ফরিদা অবাধ্য ছিল। ”
ইয়াসমিন বলেন, দেশের আসার পরও ফরিদার সঙ্গে নোমানের সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হলেও ফরিদা বরাবরই অমান্য করেছে।
“ শনিবার (১৩ মার্চ) সকালে জ্বর অনুভব করার কথা জানিয়ে ফরিদা বেগম কক্সবাজার শহরে চিকিৎসা কথা জানিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। সে ওইদিন রাতেও বাড়ী ফিরেনি। পরদিন রোববারও বাড়ী না ফেরায় মনে সন্দেহ জাগে প্রেমিক নোমানের সঙ্গে পালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকবার কল সকালে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে রিসিভ করেনি। ”
পরে সোমবার সকালে এ্যাম্বুলেন্সটির চালক কল দিয়ে ফরিদার মৃত্যুর খবর জানায় বলে জানান নিহতের ভাবী।
এ্যাম্বুলেন্স চালক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, রোববার সকালে নোমান নামের এক ব্যক্তি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে এক নারীর লাশ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী এলাকায় নিয়ে যাবার কথা জানিয়ে তার এ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া করে। পরে লাশটি নিয়ে গাড়ী কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্ট মোড় এলাকায় পৌঁছলে নোমান মিনারেল পানি কেনার কথা জানায়।
“ এতে নোমান গাড়ী থেকে নামার পর আর ফিরেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও তার সন্ধান না পাওয়ায় আমি সিদ্ধান্তহীন হয়ে পড়ি। পরে লাশটি নিয়ে শহরের জইল্ল্যার মোড় গাড়ীটি রেখে দিই। সোমবার সকাল পর্যন্ত লাশসহ গাড়ীটি সেখানেই ছিল। ”
এ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, “ সোমবার সকালে লাশের সঙ্গে গাড়ীতে একটি হ্যান্ডব্যাগের ভিতর একটি মোবাইল পাওয়া যায়। মোবাইলটিতে একটি নম্বর থেকে বেশ কয়েকটি মিসকল দেখতে পাই। পরে ওই ফোন নম্বরে কল দিয়ে এক নারীর লাশ গাড়ী পড়ে থাকার কথা জানাই। ”
এ নিয়ে নিহতের স্বজনরা পুলিশসহ শহরের জইল্ল্যার মোড় এলাকায় পৌঁছে লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানান এ্যাম্বুলেন্স চালক আলমগীর।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস বলেন, এ্যাম্বুলেন্স থেকে এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করার পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশটি ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
“ ওই নারীর মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হাতে পাওয়ার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। ”
পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দেয়া হলে তদন্তের পর মামলা নথিবদ্ধ করা হবে বলে জানান ওসি।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply