শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ

রোহিঙ্গাদের নিয়ে সংকটে সরকার

বাংলা ট্রিবিউন : বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ। পরিবেশের ক্ষতি তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে মাদক, ডাকাতি, খুনোখনিও। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা বিক্রিতে জড়িয়েছে এদের অনেকেই। মাদকের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে মারামারি খুনোখুনি লেগেই আছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, নজরদারি এবং রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতাসহ নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার।

এরইমধ্যে নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আরও প্রায় দুই হাজার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান কবে হবে, জানে না কেউ। উপরন্তু রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়ভাবে নানা সঙ্কট ও সমস্যা জটিল আকার ধারণ করছে প্রতিনিয়ত।
স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। এই হিসাব গত ৫ আগস্ট (২০২০) পর্যন্ত। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে সাত লাখ ৪১ হাজার ৮৪১ জন মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়াও আশ্রয়প্রার্থী এতিম শিশু রয়েছে ৩৯ হাজার ৮৪১ জন। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার ৩৫টি রোহিঙ্গা-ক্যাম্পে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু।

বাংলাদেশের প্রায় ১০ হাজার একর ভূমি ব্যবহার করছে তারা। শুধু নতুন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ক্যাম্পের জন্যই সাড়ে ৬ হাজার একর ভূমি বরাদ্দ করা হয়েছে।

সরকার ইতোমধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত দুই দফায় ৪০৬টি পরিবারের প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে দেশে কাজ করছে প্রায় ১৮০টি দেশি-বিদেশি এনজিও। এরমধ্যে নানা কারণে কয়েকটি এনজিওর কার্যক্রম রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনিবন্ধিত এনজিওগুলোকেও সেখানে কাজ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি।

রোহিঙ্গাদের আইনি সহায়তাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বক্ষণিক কাজ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে মানবিক সহায়তাসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থী সেল। এ ছাড়াও কাজ করছে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও সংস্থা।

রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপত্তা ও নজরদারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৩৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে ১৪২ কিলোমিটারের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে ১১১ কিলোমিটার বেড়ার কাজ শেষ হয়েছে। এই কাঁটাতারের চারপাশে ওয়াক ওয়ে বা রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। নজরদারিতে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ৪৯৫টি শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গা নাগরিক ও তাদের সন্তানদের ইংরেজি ও মিয়ানমারের ভাষা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে ১৩৪টি। পুলিশের এপিবিএন-এর দু’টি ব্যাটালিয়ন স্থাপন করা ছাড়াও স্থানীয় পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও সেনাসদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। গঠন করা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। পর্যটন শিল্পকে রক্ষার জন্যেও বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গা নাগরিকদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ছাড়াও তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে রোহিঙ্গারা ছাড়াও স্থানীয়রা সেখানে নিরাপদ থাকতে পারে। আপাতত বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মাদকপাচার নিয়ন্ত্রণ করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888