শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
বাংলা ট্রিবিউন: পদ থেকে কেন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার কারণ জানেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সদ্য পদ হারানো মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, আমাকে কেন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা জানি না। তবে এ বিষয়ে পার্টির ‘চিফ প্যাট্রন’ রওশন এরশাদের সঙ্গে একটু আগে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন ওয়েট অ্যান্ড সি। সব ঠিক হয়ে যাবে।
রবিবার (২৬ জুলাই) মহাসচিব পদ হারানোর পর এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেন রাঙ্গা। এর আগে আজ এক বিবৃতিতে দেন জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
রাঙ্গা বলেন, রওশন এরশাদ আমাকে বলেছেন, তিনি নিজেই খুব অসুস্থ। এই মাত্র সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে এসেছেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন।
তাকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সারা দেশের নেতাকর্মীরা প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, সকাল থেকে কম হলেও হাজার খানেক ফোন আমার কাছে এসেছে। তারা ক্ষুব্ধ। তবে চেয়ারম্যান যা ভালো মনে করেছেন, তা-ই করেছেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ‘বিকলাঙ্গ’ কাউকে দলের মহাসচিব হিসেবে মেনে নিতে চায় না দাবি করে রাঙ্গা বলেন, তবে একটা বিকলাঙ্গ, ডিজেবল (নিষ্ক্রিয়) মহাসচিব, এটা কেউ মেনে নিতে চায় না।
রাঙ্গা আরও বলেন, আমাদের দলে (জাতীয় পার্টি) চেয়ারম্যানকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া আছে। দলের ২০ ধারা মোতাবেক চেয়ারম্যান যা ইচ্ছে তা-ই করতে পারেন। আমার ক্ষেত্রেও চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের তা-ই করেছেন। বিভিন্ন মিডিয়ায় আমাকে সরিয়ে দেওয়ার একটা চিঠি দেখেছি। এর আগেও এরকম করা হতো। বাবলু ভাইও একসময় মহাসচিব ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন খুশি তখন বাদ দিয়েছেন। আবার যখন খুশি তখন নিয়োগ দিয়েছেন। আমাদের দলটাই এরকম।
নিজেকে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলের মাধ্যমে একমাত্র নির্বাচিত মহাসচিব উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, আমি কাউন্সিলে নির্বাচিত মহাসচিব। আমাকে বাদ দিতে হলে তো কাউন্সিল হওয়া লাগে, অথবা একটা শোকজ নোটিশও দিতে পারতো। কিন্তু কিছুই করা হয়নি। আমি কর্মীদের পক্ষে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথাবার্তা বলেছি, কেউ এরশাদ সাহেব সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করলে ছাড় দেইনি। সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিয়েছি। এসব কারণে কাউন্সিলে নেতাকর্মীরা আমাকে সমর্থন দিয়ে মহাসচিব নির্বাচিত করেছে। আমার বিপক্ষে কোনও প্রার্থীও ছিল না।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দলের নবম কাউন্সিলের আগে দলের মধ্যে দুটি গ্রুপ ছিল। রওশন এরশাদ-পন্থী ও জিএম কাদের-পন্থী। এই দুই গ্রুপই আমাকে মহাসচিব নির্বাচিত করেছিল। এখন হঠাৎ করে কেন আমাকে বাদ দেওয়া হলো, তা ঠিক বুঝলাম না। জিএম কাদেরের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত বাদ দেওয়ার কারণ জানা যাচ্ছে না। তবে চেয়ারম্যান যদি মনে করেন এটাই ভালো হয়েছে, আমি বলবো ভালো। দল যে পরিচালনা করুক, ভালো মতো করতে পারলেই হলো। তবে জিয়াউদ্দিনকে বাবলুকে একসময় এরশাদ মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ভালোভাবে দল পরিচালনা করতে পারেনি। তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছিলেন এরশাদ।
মহাসচিব পদ হারানো নিয়ে আক্ষেপ করে রাঙ্গা বলেন, দুঃখ হয় একটা জায়গায়, এই দলে কেউ কিছু করতে চায় না। কারণ, দলে চেয়ারম্যানকে এতবেশি অধিকার দেওয়া থাকে যে মনে হয় দলটা তার তৈরি করা দল। একইভাবে দলের গঠনতন্ত্রটা তৈরি করা আছে। যেটা এরশাদ তৈরি করেছিলেন। তিনি নিজে দল তৈরি করেছেন, নিজেই খরচ করেছেন সেটা ঠিক আছে। কিন্তু সেটা সবার (সব চেয়ারম্যান) জন্য প্রযোজ্য নয়। তাহলে আর কাউন্সিল করার দরকার কী ছিল। তিনি (জি এম কাদের) তার পছন্দের মত লোককে পদে বসিয়ে দিলে তো হতো। যদিও হয়েছে তা-ই।
রাঙ্গা আরও বলেন, আমি কাউকে দলে পদ দেইনি। চেয়ারম্যানই (জি এম কাদের) সবাইকে পদ দিয়েছে। কে প্রেসিডিয়াম সদস্য হবে, কে কো-চেয়ারম্যান হবে, সবই তিনি ঠিক করেছেন। দুইশ’ জনের জায়গায় ৬শ’ সদস্য করা হয়েছে। দুই-চার জন সব সময় চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেন। তারা সব সময় দলের এগিয়ে যাওয়ায় বাধা সৃষ্টি করেন।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply