রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ জীবন সংগ্রামি লাইলার কম মূল্যের সবজির দোকান শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক

করোনা প্রতিরোধের ক্ষমতা বেড়েছে মানুষের: গবেষণা

বাংলা ট্রিবিউন : করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া ব্যক্তিদেরও কিছু পরিমাণ ইমিউনিটি থাকতে পারে; নতুন  এক সমীক্ষায় এমন সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে।  সুইডেনের ওই গবেষণার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্বের বিভিন্ন পরীক্ষায় মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যতটা প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মেছে বলে ধারণা করা হয়েছিল, বাস্তবে তার চেয়েও বেশি মানুষ সুরক্ষিত।

সুইডেনের কারোলিঙ্কসা ইন্সটিটিউটের গবেষকরা মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি ও টি-সেল উভয়ের উপস্থিতি শনাক্তের পরীক্ষা চালিয়েছেন। এতে দেখা গেছে অ্যান্টিবডি না থাকলেও অনেকের শরীরে টি-সেলের উপস্থিতি রয়েছে। এই টি-সেল  করোনায় আক্রান্ত কোষকে শনাক্ত ও ধ্বংস করে। প্রতি ১ জন অ্যান্টিবডি-সমেত রোগীর বিপরীতে এমন দুইজন টি-সেল সমেত ব্যক্তি পাওয়া গেছে। টি-সেল আছে, তবে অ্যান্টিবডি নেই, এই বিষয়টির একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে, এসব মানুষের শরীরে হয়তো অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হওয়ার প্রয়োজন হয়নি। এর অর্থ হলো, অ্যান্টিবডি উপস্থিতির ভিত্তিতে আগের পরীক্ষাগুলোতে যত মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মেছে বলে উঠে এসেছে, বাস্তবে এই সংখ্যা তার চেয়েও বেশি।

অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় পজিটিভ আসা প্রতিটি ব্যক্তির দুইটি নির্দিষ্ট টি-সেল শনাক্ত করা গেছে, যা সংক্রামিত কোষগুলো শনাক্তের পর সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। একইসঙ্গে কোভিড-১৯-এর মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গবিহীন রোগীদের ক্ষেত্রেও এ প্রবণতা দেখা গেছে। তবে এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে, এসব টি-সেল কেবল আক্রান্ত ব্যক্তিকেই সুরক্ষা দেয় নাকি তার মাধ্যমে অন্যদেরও সংক্রমিত হওয়ার পথও বন্ধ করে দেয়।  

সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা অ্যান্টিবডি ও টি-সেলের জন্য ২০০ জনের পরীক্ষা করেছিলেন। এদের একাংশ ছিল রক্তদাতা। বাকীদের বাছাই করা হয়েছিল সুইডেনে সংক্রমিতদের মধ্য থেকে। তারা মূলত উত্তর ইতালির মতো সংক্রমিত এলাকা থেকে ফিরেছিলেন। এখান থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, অ্যান্টিবডি পরীক্ষার পরিসংখ্যানের চেয়েও বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কিছু মাত্রার করোনা ইমিউনিটি বা প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকতে পারে।  তারা মনে করছেন, এই ব্যক্তিদের অ্যান্টিবডি প্রতিক্রিয়া হয়তো বিবর্ণ হয়ে গেছে। অথবা বিদ্যমান পরীক্ষা পদ্ধতিতে এটি শনাক্তযোগ্য নয়।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ড্যানি আল্টম্যান এই গবেষণাকে ‘জোরালো, চিত্তাকর্ষক ও পূর্ণাঙ্গ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মার্কাস বুগার্ট। তিনি বলেন, এই টি-সেলগুলো ‘জীবাণুনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা’ সরবরাহ করে কিনা তা বুঝতে আরও বিশ্লেষণ করা দরকার। অর্থাৎ, এ কোষগুলো হয় ভাইরাসটিকে পুরোপুরি আটকে দেয় নয়তো অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে এটি ভাইরাস বহন বা সংক্রমণকে থামিয়ে দেয় না।

সহকারী অধ্যাপক বুগার্ট বলেন, করোনার অনাক্রম্যতা সম্পর্কে বেশিরভাগ আলোচনায় প্রতিষেধক অ্যান্টিবডি এবং ওয়াই-আকারের প্রোটিনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটি ‘লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের মতো কাজ করে।’ কোষগুলোতে প্রবেশের আগে ভাইরাসকে আবদ্ধ করে এবং এটিকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে। অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করতে ব্যর্থ হলে এটি আপনার কোষগুলোকে ভাইরাস তৈরির কারখানায় পরিণত করতে পারে। এদিকে টি-সেলগুলো ইতোমধ্যেই সংক্রমিত কোষগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানায়। এটি সংক্রমিত কোষগুলোর অন্য স্বাস্থ্যকর কোষে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ বন্ধ করে দিয়ে এগুলোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।

অ্যান্টিবডির মতো করেই টি-সেল মানুষের ইমিউন সিস্টেমের বিটের একটি অংশ যার স্মৃতিশক্তি রয়েছে। এটি যখন কোনও নির্দিষ্ট ভাইরাস শনাক্ত করে তখন এটি দ্রুত আক্রান্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সমর্থ হয়।

যুক্তরাজ্যে ইতোমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইন্টারলেউকিন ৭ নামের একটি ওষুধের ট্রায়াল করা হচ্ছে। এটি আক্রান্তদের সুস্থ হতে সহায়তা করতে পারে কিনা তা পরীক্ষার জন্যই এ ট্রায়াল সম্পন্ন করা হচ্ছে।  ইন্টারলেউকিন ৭ নামের এ ওষুধটি টি-সেলের উৎপাদন বাড়ানোর কাজ করে।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট, কিংস কলেজ লন্ডন এবং গাইস অ্যান্ড সেন্ট থমাস হাসপাতালের গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন যে, মারাত্মকভাবে অসুস্থ ৬০ জন রোগীর টি-সেলে ক্র্যাশ হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছিল। কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় অবশ্য এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। সেখানে অপেক্ষাকৃত বেশি অসুস্থদের অ্যান্টিবডি এবং টি-সেলের উৎপাদনও অপেক্ষাকৃত বেশি দেখা গিয়েছিল। তবে টিমটি বলেছে, এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

এটি এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে বড় টি-সেল স্টাডি। তবে তুলনামূলক কম সংখ্যক রোগী নিয়ে এ গবেষণা চালানো হয়েছে।  অ্যান্টিবডির তুলনায় টি-সেল শনাক্তকরণ অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। ফলে এই মুহূর্তে টি-সেলের ব্যাপকভিত্তিক পরীক্ষায় যাওয়া সম্ভব নয়। 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888