মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৯ অপরাহ্ন

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজার

বিশেষ প্রতিবেদক : সমুদ্র শহর কক্সবাজারবাসির দীর্ঘদিনের স্বপ্নকে বাস্তবেরূপ দিতে শনিবার ১১ নভেম্বর আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই তিনি দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে উদ্বোধন করবেন ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার রেল লাইনের। একই সঙ্গে সাড়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৬৮ কোটি টাকার ৩ টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রধানমন্ত্রী শনিবার কক্সবাজার পৌঁছার পর বেলা ১১ টায় যাবেন কক্সবাজারের ঝিলংজাস্থ ঝিনুক আদলে তৈরি আইকনিক রেল স্টেশনে। যেখানে এক সুধি সমাবেশ শেষে উদ্বোধন করবেন রেল লাইন। ট্রেনে করে ঘুরে দেখবেন রেল লাইনের কিছু অংশ। যেখান থেকে তিনি যাবেন মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে। যেখানে আওয়ামীলীগ আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘীরে কক্সবাজার পুরো জেলা জুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে মাতারবাড়ির জনসভাস্থল, আইকনিক রেল স্টেশন সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। জেলা জুড়ে অতিরিক্ত সর্তকতামুলক ব্যবস্থা, বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ও অবস্থান দেখা গেছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে দলের তৃণমূল পর্যায়ে বর্ধিত সভা করে সকল স্তরে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চলছে স্বাগত মিছিল, মাইকিং ও প্রচারণা। আশা করছেন, সমাবেশে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ২৮ বছর পর মাতারবাড়ি যাচ্ছে। যে মাতারবাড়িকে শেখ হাসিনা নিজেই ‘দ্বিতীয় টুঙ্গীপাড়া’ হিসেবে নামকরণ করেছেন। তাই মাতারবাড়িবাসির যে উচ্ছ¡াসের শেষ নেই। শুক্রবার জনসভাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে মঞ্চ তৈরি প্রায় শেষ। তৈরি করা হয়ে সভাস্থলের মাঠ ও আশে-পাশের এলাকা।

মাতারবাড়ির প্রবীণ বাসিন্দার রফিকুল ইসলামের সাথে আলাপ হয় মাতারবাড়ি বাজারেই। তিনি জানান, শেখ হাসিনা বিগত ১৯৯৪ সালে বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালীন ঘূর্ণিঝড়ে কবলিত মানুষের দূরদশা দেখতে কক্সবাজার সফরে আসেন। ওইসময় তিনি সমুদ্র উপকূলের দুর্যোগ কবলিত মাতারবাড়িও পরিদর্শন করেন। তাঁর সফরকে ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সেখানে সংক্ষিপ্ত আকারে জনসভা আহবান করেছিল। আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতারাসহ স্থানীয়রা ধারণা করেছিলেন জনসভায় কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটবে। কিন্তু সেইদিন জনসভাস্থল মাতারবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ কানাকানায় পূর্ণ হয়ে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে মানুষের ঢল নেমেছিল। বাড়ি ঘরের দরজা তালাবদ্ধ রেখে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন অসংখ্য নারী-শিশুরাও। অভূতপূর্ব জনসমাবেশের দৃশ্য দেখে সেইদিন আবেগে আপ্লুত হয়েছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী। মাতারবাড়িকে ‘নিজের নানারবাড়ি’ আখ্যা দিয়ে তিনি মন্তব্য করেছিলেন ‘দ্বিতীয় টুঙ্গীপাড়া’। সেই থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মিরাসহ রাজনৈতিক সচেতন মহলের কাছে মাতারবাড়ি দেশের দ্বিতীয় টুঙ্গীপাড়া। শনিবার দীর্ঘ ২৮ বছর পর সেই মাতারবাড়ি সফরে আসছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে।

এসময় আলোচনায় যোগ দেন স্থানীয় অনেকেই। দারা বলছেন, বৃহত্তর মাতারবাড়ি ইউনিয়নের সিংহভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক। এই ইউনিয়নের ভোটাররা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনেও বরাবরই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন। মাতারবাড়িকে দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া আখ্যা দেওয়া শেখ হাসিনাকে স্থানীয়রা মনে করেন নিজেদের কারও মা, কারও বোন এবং কারও খালা। ফলে দীর্ঘ ২৮ বছর নিজেদের স্বজন আবার সফরে আসার খবরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে আকুল প্রতীক্ষা তাদের।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বলছেন, মহেশখালী ছাড়াও জনসভায় চকরিয়া, পেকুয়া, কক্সবাজার সহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ আসবেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইফ আবু সাঈদ মাহমুদ আল স্বপন এমপি বলেছেন, মাতারবাড়িকে প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় টুঙ্গীপাড়া হিসেবে জানেন। আর মাতারবাড়ি প্রতি উনার আবেগ ও ভালবাসা। সেই মাতারবাড়িতে বাস্তবায়িত হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। এতে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক গতিসজ্ঞার হবে। জনসভায় তারই প্রমাণ দেবে মানুষ।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে সকল প্রস্তুতি শেষ। রেল স্টেশন, মাতারবাড়ি সভাস্থল সহ সকল কিছু সাজানো শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888