শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন

ছাগল দিয়ে অভিনব যুদ্ধ!

কক্সবাজারটাইমস ডেস্ক :

আধিপত্য বিস্তার, বিদ্বেষ, হিংসা, পেশীশক্তি প্রদর্শন ইত্যাদি কারণে প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আদিতে মানব প্রজাতি বিস্তারের কথা যদি স্মরণ করা হয়, তাহলে সেখানে যুদ্ধের ইতিহাসই প্রাধান্য পাবে। প্রথমে গোত্রে-গোত্রে তারপর রাষ্ট্রব্যবস্থা হবার পর রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের যুদ্ধ হয়েছে। এভাবেই চলে আসছে শুরু থেকে এ পর্যন্ত।

অনেক বড় কারণে যেমন যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, তেমন তুচ্ছ কারণেও ঘটেছে ভয়াবহ যুদ্ধ। কিছু যুদ্ধ আবার খুবই হাস্যকর। আজকে থাকছে সেরকম একটি অভিনব যুদ্ধে ইতিহাস।

সুইজারল্যান্ডের গ্রুয়ার নামক একটি রাজ্যে মানুষ যুদ্ধে জয়ী হতে না পেরে ছাগল দিয়ে অভিনব যুদ্ধ করেছে। আবার সেই যুদ্ধে জয়ী হওয়া খবর পাওয়া গেছে। তা নিয়ে রীতিমতো বিশ্বজুড়ে হাসির রোল পড়ে গেছে।

১৪৯৯ সালের ঘটনা। সুইজারল্যান্ডের গ্রুয়ার শহর আক্রমণ করল পাশের শহরের বার্নিজ উপজাতিরা। নিজের দেশ রক্ষার জন্য গ্রুয়ার রাজ্যের জনগণও ঝাঁপিয়ে পড়ল যুদ্ধে। সব পরিবারের পুরুষরাই ঘর ছেড়ে যুদ্ধে যোগ দিল। প্রাণপণ যুদ্ধ করেও তাদের অবরোধ কিছুতেই ভাঙতে পারছিল না গ্রুয়াররা। বার্নিজ উপজাতিরা ক্রমশ এগিয়ে আসতে লাগল তাদের দিকে। গ্রুয়ার শহরটা ছিল একটা পাহাড়ের উপর। আর বার্নিজদের অবস্থান ঠিক পাহাড়ের নিচে। ওখান থেকেই তারা ধীরে ধীরে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ওদিকে গ্রুয়ায় প্রত্যেক বাড়িতে মেয়ে ও শিশুরা মহা চিন্তায় পড়ে গেল।

যুদ্ধচলাকালে একদিন রাতে শহরের সব মেয়েরা একটা গোপন বৈঠক করল। কী করে এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বৈঠকের এটাই ছিল মূল প্রতিপাদ্য। অবশেষে তারা এক মজার সিদ্ধান্ত নিল। গ্রুয়ার রাজ্যের সবাই ছিল মেষপালক। তাদের আয়ের প্রধান উৎসই ছিল পশুচারণ। সবার ঘরে দশ-বিশটা করে ছাগল থাকত। মেয়েরা করল কী, সবাই মিলে হাজারখানেক ছাগল একত্র করল। পাহাড়ি ছাগল। শিংগুলোও বেশ বড় বড়। মেয়েরা প্রত্যেক ছাগলের মাথায় বড় শিংয়ের সঙ্গে দুটো করে মশাল দিল বেঁধে। এরপর গভীর রাতে মশালে আগুন ধরিয়ে সেগুলোকে ছেড়ে দিল বাইরে। ছাগলগুলো দৌড়াতে লাগল।

এ দৃশ্য দেখে বার্নিজরা বেশ ভয় পেয়ে গেল। তাদের ভেতরে ছিল প্রচুর ভূতের ভয়। দূর থেকে কিছু বোঝারও উপায় নাই। হাজার হাজার আলোকে এভাবে আসতে দেখে তারা এটাকে ভূতের আক্রমণ ভেবে বসল। তখনই ঘটল একটা বিস্ময়কর ঘটনা ! শয়তান ভেবে তারা যে যার মতো দিল ভৌ দৌড়। সব্বাই গেলো পালিয়ে অস্ত্র-শস্ত্র সব ফেলে।

সকালে গ্রুয়াররা দেখলো, বার্নিজরা সব উধাও। আর তাদের ছাগলগুলো মনের আনন্দে ঘাস খেয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের শিংয়ে তখনও মশালগুলো বাঁধা ছিল। বাড়ি ফিরে নিজেদের স্ত্রীদের কাছ থেকে ঘটনার পুরোটা জানতে পারল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888